আজ আমরা দেখে নেব ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি টি। সবাইকে Entertainbangla এর রেসিপি পার্টে স্বাগত জানাই। আজকাল আমরা বার্গার পাস্তা পিজ্জা বা যে কোন স্টার্টার এর সাথেই কিন্তু মেয়োনিজ ব্যবহার করে থাকি। বাড়িতেই যদি সহজ পদ্ধতিতে ভেজ মেয়োনিজ রেসিপিটি তৈরি করে নেয়া যায় তবে দোকান থেকে মেয়োনিজ কেনার কোন প্রয়োজন পড়ে না। আজকের এই ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি পড়বে আমরা দু ধরনের মেয়োনিজের রেসিপি শেয়ার করব। দুটো মেয়োনিজ এর রেসিপি কিন্তু খুবই সহজ ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে কিন্তু আমরা বাড়ি নিয়ে ফেলতে পারি এই ভেজ মেয়োনিজ রেসিপিটি। চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক কিভাবে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলবেন দোকানের মতন ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি।

ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি এর উপকরন
এখানে আমরা দু’রকম ভাবে ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি বানিয়ে দেখব। দুটির ক্ষেত্রেই উপকরণগুলো একই থাকবে, শুধুমাত্র বানানোর পদ্ধতি টা আলাদা হবে। বাড়িতে ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি টি বানাতে কি কি উপকরণ লাগছে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
- ১/২ কাপ বা ১২৫ মিলি দুধ
- ১ চা চামচ গুরকরা চিনি
- ১/৪ চা চামচ লবণ
- ১ চা চামচ ভিনেগার
- ১/২ চা চামচ হোয়াইট পেপার পাউডার
- ১ কাপ রিফাইন তেল(২৬০ মিলি)
ডিম ছাড়া ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি তৈরি
আগেই বলেছি আমরা এখানে দুইটি আলাদা আলাদা পদ্ধতি শেয়ার করব। দুইটির ক্ষেত্রেই স্বাদ একই থাকবে শুধু থিকনেস আলাদা হবে।তাহলে চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক বাড়িতেই কত সহজে অল্প কিছু উপাদানের সাহায্যে আপনি দোকানের মতন ভেজ নিয়ে রেসিপিটি বানিয়ে নিতে পারবেন।
আরও কিছু রেসিপি
বাড়িতে ভ্যানিলা কেক তৈরির রেসিপি
প্রথম পদ্ধতি
প্রথমে একটি বড় পাত্রে হাফ কাপ মতন ঠান্ডা দুধ নিয়ে নিতে হবে। হাফ কাপ মানে ১২৫ মিলি। ঠান্ডা দুধই কিন্তু ব্যবহার করতে হবে। গরম দুধ ব্যবহার করলে কিন্তু ভেজ মেয়োনিজ রেসিপি টি ঠিকঠাক তৈরি করা যাবে না।
এরপর আমরা এই ঠান্ডা দুধের মধ্যে এক চা চামচ মত চিনিগুঁড়ো দিয়ে দেব। ঘুরো চিনি বা পাউডার সুগার না থাকলে আপনারা দানা চিনি বা বাড়িতে যে চিনি আছে সেই চিনি ব্যবহার করতে পারেন। তবে গুরুচিনি ব্যবহার করলে মেয়োনিজের টেক্সচারটা খুবই ক্রিমি হয়। কিন্তু দানা চিনি ব্যবহার করলে অনেক সময় মেয়োনিজের মধ্যে চিনি গুলি ঠিকভাবে মেশে না তাই দানা দানা থেকে যায়। তাই দানা চিনি ইউজ করলে এই দিকটা খেয়াল রাখতে হবে যেন চিনি গুলি খুব ভালোভাবে দুধের সাথে মিশে যায়।
এরপর এই মিশনে যোগ করব ১/৪ চা চামচ লবণ। আপনারা চাইলে নিজেদের প্রয়োজন মত এই লবণের পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারেন। এবার দিয়ে দেব হাফ চা চামচ মত হোয়াইট পেপার পাউডার। বাড়িতে হোয়াইট পেপার পাউডার না থাকলে আপনারা ব্ল্যাক পেপার পাউডারও ব্যবহার করতে পারেন। এবার দিয়ে দেব এক চা চামচ মতন ভিনেগার। এখানে আমরা পাতি লেবুর রস ব্যবহার করবো না তবে আপনারা চাইলে এক থেকে দু ফোটা পাতি লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
এখন এই মিশ্রণটিতে আমরা দিয়ে দেব এক কাপ মতন রিফাইন তেল (২৬০ মিলি )। এই ভেজ মেয়োনিজটিতে আপনারা চাইলে সয়াবিন তেলের বদলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি বা যারা হাই প্রেসারে ভুগছেন তাদের জন্য কিন্তু এই অলিভ অয়েল টা ব্যবহার করাই বেশি ভালো হবে।
সবকটা উপাদান মেশানো হয়ে গেলে এবার আপনারা একটি কাটা চামচ দিয়ে মিশ্রণটিকে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন কাটা চামচের বদলে যদি আপনাদের কাছে হ্যান্ড ব্লেন্ডার থাকে তবে এই কাজটি কিন্তু অনেক বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। আবার আপনারা চাইলে এই মিক্সিং এর ব্যাপারটা কিন্তু একটি মিক্সারও করতে পারেন। হ্যান্ড ব্লেন্ডার বা মিক্সি ইউজ করলে দুই থেকে আড়াই মিনিট ধরে কিন্তু মিক্সারটাকে মিক্সিং করতে হবে।

যেহেতু আমরা এখানে এগলেস মেয়োনিজ বানিয়েছি সেই ক্ষেত্রে মেয়োনিজটি কিন্তু খুব বেশি গাঢ় হবে না। একটু পাতলা ধরনেরই হবে। কিন্তু এটাকে আমরা যখন একটা কন্টেনারে রেখে ফ্রিজে রেখে দেবো তখন কিন্তু এর থিকনেসটা অনেকটাই গাঢ় হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় পদ্ধতি
চলুন দ্বিতীয় পদ্ধতিতে কিভাবে আমরা এগলেস মেয়োনিজ বা ভেজ মেয়োনিজ রেসিপিটি তৈরি করব দেখে নেয়া যাক।
যে সমস্ত উপকরণ গুলি আমরা প্রথম পদ্ধতিটিতে ব্যবহার করেছি দ্বিতীয় পদ্ধতিটির ক্ষেত্রেও কিন্তু সেম একই ধরনের উপকরণ আমরা ইউজ করব শুধুমাত্র তৈরি করার পদ্ধতিটা সামান্য আলাদা হওয়ার কারণে এই মেয়োনিজটি কিন্তু অনেক বেশি গাঢ় বা thick হবে।
প্রথম পদ্ধতিটির মতন এই পদ্ধতিতেও আমরা একটা বড় পাত্র নিয়ে নেব। এই পদ্ধতিতে আমরা শুধুমাত্র হ্যান্ড ব্লেন্ডার ইউজ করব। এবার পাত্রটিতে আমরা একই রকম ভাবে দুধ, গুড়ো করে রাখা চিন, লবণ এবং ভিনেগার দিয়ে দেব।
এখন হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে মিশ্রণটি আমরা মিক্সিং শুরু করব এক হাত দিয়ে আমরা হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে মিক্সিং করতে থাকবো এবং তার সাথে সাথে অল্প অল্প করে সাদা তেল বা অলিভ অয়েল মেশাতে থাকবো। মনে রাখতে হবে প্রথমবারের মতন এইবারও কিন্তু আমাদের ঠিক একই পরিমাণ তেল প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু একবারে সমস্ত তেলটা আমরা ব্যবহার করব না অল্প অল্প করে ব্যবহার করব। এক হাত দিয়ে মিক্সিং করতে থাকবো এবং অন্য হাত দিয়ে অল্প অল্প করে তেল যোগ করতে থাকবো। এইভাবে মিক্সিং করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেখা যাবে মেয়োনিজ মিশ্রণটি ফুলে উঠবে। এইভাবেই সম্পূর্ণ তেলটি মিশ্রণটির সাথে যোগ করতে থাকুন এবং হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করতে থাকুন। ৫ থেকে ৬ মিনিট এইভাবে ব্লেন্ড করলেই আমাদের ভেজ মেয়োনিজ রেসিপিটি তৈরি হয়ে যাবে।

এইবার প্রথম পদ্ধতিতে তৈরি করা মেয়োনিজটি এবং দ্বিতীয় পদ্ধতিতে তৈরি করা মেয়োনিস্ট্রির মধ্যে পার্থক্যটা আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে তৈরি করা মেয়োনিজটি অনেক বেশি মোটা এবং গাঢ় হয়ে থাকে। ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে আমার কিন্তু দ্বিতীয় পদ্ধতিতে তৈরি মেয়োনিস্টি বেশি পছন্দের। তবে যার যেমন কনসিসটেন্সি প্রয়োজন, সেইমতো আপনারা কিন্তু প্রথম পদ্ধতি বা দ্বিতীয় পদ্ধতি ফলো করে বাড়িতেই ভেজ মেয়োনিজ রেসিপিটি বানিয়ে ফেলতে পারেন সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে একবার হলেও অন্ততপক্ষে বাড়িতে চেষ্টা করে দেখুন আশা করি ভালো লাগবে।
মেয়োনিজের উপকারিতা
মেয়োনিজ অনেকেই খেয়েছেন কিন্তু মেয়োনিজের উপকারিতা বা গুনাগুন সম্পরকে হয়ত অনেকেই জানেন না।মেয়োনিজের কিন্তু অনেক গুন আছে যেমন
- চুল কে সিল্কি এবং মঝবুত রাখতে মেয়োনিজের ব্যবহার করা যায়। যদি আপনি নিয়মিত চুলের গোঁড়ায় মেয়োনিজ লাগান তবে নিজেথেকেই চুলের বৃদ্ধির পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন।
- নিজের স্কিনের যত্ন নিতে ও স্কিন কে আরও কোমল করতেও কিন্তু মেয়োনিজ ব্যবহার করা যেতে পারে।মেয়োনিজ কিন্তু রুক্ষ ত্বককে কোমল ও সুন্দর করে তুলতে পারে
- প্রতিদিন পরিমান মতন মেয়োনিজ খেলে সেটা আপনার হার্ট এর জন্য খুবই উপকারী। মেয়োনিজে আছে ভিটামিন ই যাকিনা হার্ট এর স্ট্রোক হবার সম্ভবনাকে অনেকটাই কমিয়ে আনে এবং ওমেগা ৩ হার্ট কে স্বাভাবিক ভাবে সুস্থ রাখে।
এছাড়া সুগের লেভেল কমাতে, ফুস্ফুস্ কে সুস্থ রাখতেও মেয়োনিজে খেতে পারেন।